জনপ্রিয় গোয়েন্দা চরিত্র মাসুদ রানা ২০২০ সালে ছবি নির্মাণের ঘোষণা দেয় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়া। ঘোষণার পর থেকেই ছবিটি নিয়ে সবার ছিল তুমুল আগ্রহ। কে অভিনয় করবেন, পরিচালক হিসেবে থাকবেন কে—কবে ছবিটি মানুষ দেখার সুযোগ পাবেন, এ রকম নানা বিষয়। একটা সময় শুটিং শুরু হয়। জানা যায়, ছবিতে নায়িকা হবেন আলোচিত পূজা চেরী। বছরের পর বছর যায়, ছবির শুটিং আর শেষ হয় না। গত বছরের এপ্রিলে ছবিটির সর্বশেষ শুটিং হয়। এরপর আর শুটিংয়ের কোনো খবর দিতে পারেনি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান। আজ শুক্রবার ‘মাসুদ রানা’ ছবির পরিচালক সৈকত নাসির প্রথম আলোকে জানালেন, আলোচিত ‘মাসুদ রানা’ ছবিটি অনিশ্চিত। এর বাকি অংশের শুটিং শেষ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা তিনি দেখছেন না।
আজ শুক্রবার বিকেলে কথা প্রসঙ্গে সৈকত নাসির বললেন, ‘আমাদের সব মিলিয়ে মাত্র ৬ দিনের শুটিং বাকি আছে। এর মধ্যে একটি গান আর কয়েকটি দৃশ্য। কিন্তু গত বছর থেকে কয়েকবার শুটিংয়ের পরিকল্পনা করা হয়। এরপর শুটিংয়ের আগমুহূর্তে সিদ্ধান্ত বদল করতে হয়। আমি যত দূর জানতে পেরেছি, ফাইন্যান্সিয়াল ইস্যুর কারণে ছবিটির শুটিং শেষ করা যাচ্ছে না। অর্থাভাবে আমরা কাজ আর করতে পারছি না।’
সৈকত নাসির জানালেন, ‘মাসুদ রানা’ ছবির পেছনে তিনি অনেক সময় দিয়েছেন। এই ছবির কারণে কয়েকটি নতুন ছবির কাজও হতে নেননি। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
সৈকত বললেন, ‘সত্যি বলতে, আমি ছবিটা নিয়ে বিরক্ত হয়ে আছি। এত দিন কোনো ছবি নিয়ে পড়ে থাকার তো মানে হয় না। এত লম্বা সময় ধরে শুটিং চলায় ছবির অনেক দৃশ্যের ধারাবাহিকতা ধরে রাখাও সম্ভব নয়। আমি বিরক্ত হয়ে পড়েছি। নিজেও নতুন কাজে মনোযোগী হয়েছি। আগামী বছরের ঈদুল আজহার ছবির শুটিংয়ের পরিকল্পনা শুরু করেছি। আমি আর “মাসুদ রানা” নিয়ে পড়ে থাকতে চাই না। তবে এটা ঠিক, কাজটা আমার ভীষণ প্রিয় ছিল, মন দিয়ে শুটিংও করেছি। কাজটা মানুষের কাছে নিয়ে যেতে পারলে ভালো লাগত। পরিশ্রম সার্থক হতো।’
‘মাসুদ রানা’ ছবিতে সোহানা চরিত্রে অভিনয় করেছেন চিত্র নায়িকা পূজা চেরী। এই ছবির জন্য তিনিও অনেক পরিশ্রম করেছিলেন। শুটিংয়ে আহত হয়ে চিকিৎসা নিয়ে শুটিং করেছেন।
২০২১ সালের এপ্রিলে টাঙ্গাইলে ‘মাসুদ রানা’ ছবির শুটিংয়ের সময় আহত পূজা প্রথম আলোকে এভাবেই বলেছিলেন, ‘জীবনে যে কটি ছবিতে অভিনয় করেছি, সব কটিতেই শাড়ির আঁচল উড়িয়ে চলে এসেছি বলা যায়। এই প্রথম কোনো ছবিতে আমাকে বেশ পরিশ্রম করতে হয়েছে। তবে এতে আমার কোনো কষ্ট নেই; বরং আনন্দই লাগছে। এমনও মনে হচ্ছে, ব্যথা পেয়েছি তো কী হয়েছে? আরও ব্যথা পেলেও সমস্যা হবে না। আমি চরিত্রের মধ্যে ডুবে থাকতে চাই। চ্যালেঞ্জিং সব চরিত্রে অভিনয় করতে ভালো লাগছে আমার।’ কিন্তু ছবিটির শুটিং শেষ না হওয়ার কারণে তাঁরও মন খারাপ।
সৈকত নাসির পরিচালিত ‘মাসুদ রানা’ ছবির গল্প ও চিত্রনাট্য লিখেছেন বাংলা থ্রিলারের জনক কাজী আনোয়ার হোসেন এবং জাজ মাল্টি মিডিয়ার স্বত্বাধিকারী আবদুল আজিজ।