নিজস্ব প্রতিবেদক : আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে ভুয়া তথ্য ও বিদ্বেষমূলক প্রচারণা নির্বাচনী প্রক্রিয়ার বিশ্বাসযোগ্যতা, সামাজিক স্থিতি এবং নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণের জন্য অভূতপূর্ব ঝুঁকি সৃষ্টি করেছে। ডিজিটাল অধিকার ও তথ্য গবেষণা প্রতিষ্ঠান 'ডিজিটালি রাইট'-এর এক গবেষণা থেকে এমন সতর্কবার্তা জানান হয়েছে।
এশিয়া ফাউন্ডেশনের সহায়তায় 'ট্যাকলিং ইলেকশন ডিসইনফরমেশন ইন বাংলাদেশ: বিল্ডিং কালেকটিভ রেসপন্সেস ফর ইলেক্টোরাল ইন্টেগ্রিটি' শিরোনামে এই গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করেছে ডিজিটালি রাইট। যুক্তরাজ্যের ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিসের অর্থায়নে 'প্রমোটিং ইফেকটিভ, রেসপনসিভ অ্যান্ড ইনক্লুসিভ গভর্ন্যান্স ইন বাংলাদেশ' কর্মসূচির আওতায় গবেষণাটি বাস্তবায়িত হয়েছে।
আজ রবিবার (২ নভেম্বর) ঢাকার গুলশানে একটি হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রতিবেদনটির ফলাফল প্রকাশ করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গণমাধ্যম প্রতিনিধি, ফ্যাক্ট-চেকার, নির্বাচনী পর্যবেক্ষক সংস্থা, শিক্ষাবিদ ও নাগরিক সমাজের নেতারা।
গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশের অনলাইন তথ্যপরিবেশ এখন ভীষণভাবে ভঙ্গুর ও বিভক্ত হয়ে পড়েছে। রাজনৈতিক দল, ধর্মীয় গোষ্ঠী, বিদেশি ও প্রবাসী প্রভাব বিস্তারকারী—সবাই যেন এক ধরনের 'ডিজিটাল প্রতিযোগিতায়' নেমেছে, যেখানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর কনটেন্ট, প্রোপাগান্ডা নেটওয়ার্ক ও বাণিজ্যিক কনটেন্ট নির্মাতাদের মাধ্যমে জনমত প্রভাবিত করার চেষ্টা চলছে।
গবেষণা বলছে, ভুয়া তথ্য কেবল রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার হাতিয়ার নয়, এটি এখন জনআস্থা কমানো, সাম্প্রদায়িক বিভাজন ও নারীর কণ্ঠরোধের অস্ত্রে পরিণত হয়েছে। বিকৃত ছবি, মনগড়া ভিডিও ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে তৈরি কনটেন্ট নারী প্রার্থী ও সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হচ্ছে—যা নির্বাচনের আগে ভয়ভীতি, হয়রানি ও ভোটার দমন বাড়িয়ে তুলতে পারে।
ডিজিটালি রাইটের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই ঝুঁকির বিপরীতে প্রস্তুতি এখনো আশঙ্কাজনকভাবে দুর্বল। ১৭ কোটির বেশি জনসংখ্যার দেশে প্রাতিষ্ঠানিক ফ্যাক্ট-চেকারের সংখ্যা ৪০ থেকে ৫০ জন। বেশিরভাগ মূলধারার গণমাধ্যমে ফ্যাক্ট-চেকার নেই। সাংবাদিক ও ফ্যাক্ট-চেকাররা প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত সরঞ্জাম ও পারস্পরিক সমন্বয়ের অভাবে ভুগছেন বলেও বিজ্ঞপ্তিতে বলঅ হয়েছে।