আওয়ামী লীগ আমলে সাংবাদিকতা তলানিতে ছিল বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ইশতেহারে রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি প্রসঙ্গ— শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় অংশ নিয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি।
প্রেস সচিব বলেন, সরকারের সঙ্গে মিডিয়ার সম্পর্ক ১৯৪৭ সাল থেকে ওঠানামা করছে, কখনো ভালো অবস্থায়, কখনো আবার খারাপ অবস্থায়। আইয়ুব খানের সময় সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ছিল, কিন্তু ৯০-এর পর সাংবাদিকরা সবচেয়ে বেশি স্বাধীনতা পেয়েছিলেন কেয়ারটেকার সরকারের আমলে। আওয়ামী লীগ আমলে সাংবাদিকতার অবস্থা তলানিতে গিয়েছিল। হাসিনার আমলে সাংবাদিকতার দুর্বৃত্তায়ন থেকে বের হওয়ার চেষ্টা চলছে। অপতথ্য মোকাবিলা করতে না পারলে ভবিষ্যতের গণতন্ত্র চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে।
তিনি বলেন, বর্তমানে অনেকে মবের ভয় পাচ্ছেন, তবে আমরা কখনো কোনো নিউজ নিয়ন্ত্রণ করব না। এখন প্রশ্ন হলো, সামনে যদি রাজনৈতিক সরকার আসে, তাহলে কি এই সংস্কৃতি থাকবে? বর্তমানে এমন মানুষও মিসইনফরমেশন ছড়াচ্ছেন যারা ভালো জানেন, এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা পর্যন্ত।
শফিকুল আলম বলেন, সরকার মিসইনফরমেশন নিয়ে সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছে, বিশেষ করে সেন্টমার্টিন এবং মাইলস্টোন নিয়ে ভুয়া খবরের পরিমাণ ছিল অযাচিত। চট্টগ্রাম পোর্ট এবং উত্তরপাড়া নিয়ে যে পরিমাণ মিথ্যা খবর ছড়ানো হয়েছে, তা অকল্পনীয়।
তিনি বলেন, বিদেশে মিসইনফরমেশন ছড়ালে জরিমানা করা হয়, কিন্তু আমাদের দেশে তা নেই। প্রতিদিন টকশোতে মিথ্যা কথা বলা হচ্ছে। আমরা মেটাকে ফেসবুকে মিসইনফরমেশন নিয়ে পদক্ষেপ নিতে বলেছি, কিন্তু এটা দীর্ঘস্থায়ী প্রক্রিয়া।
প্রেস সচিব বলেন, ভবিষ্যতে ক্ষমতাসীন সরকারকে মিসইনফরমেশন মোকাবিলার বিষয়ে ব্রেইনস্টর্মিং করা উচিত। যদি আমরা মিসইনফরমেশন ট্যাকেল করতে না পারি, তবে ভবিষ্যতের গণতন্ত্র চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে।
সিজিএস এর প্রেসিডেন্ট জিল্লুর রহমান অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন। আলোচনায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক, ড. মওদুদ আলমগীর পাভেল, বিএনপি চেয়ারপারসনের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটির বিশেষ সহকারী ড. সাইমুম পারভেজ, গণফোরামের সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, সিজিএসের নির্বাহী পরিচালক পারভেজ করিম আব্বাসী, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের সহকারী সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মঞ্জুর মঈন, জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব, মুশফিকুস সালেহীন, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের যুগ্ম সচিব দিদার ভূঁইয়া, আমার বাংলাদেশ পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাসরিন সুলতানা মিলি, গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁন, গণসংহতি আন্দোলনের রাজনৈতিক পরিষদ সদস্য তাসলিমা আখতার, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি এম আবদুল্লাহ ও খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মুস্তাফিজুর রহমান ফয়সাল।