জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম অভিযোগ করেছেন যে, নির্বাচন কমিশন শাপলা প্রতীক দেওয়ার বিষয়ে চাপে রয়েছে, যার ফলে তারা কোনো সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা দিতে পারছে না। তিনি জানান, নির্বাচন কমিশন শেষ পর্যন্ত জানিয়েছে যে, তারা এনসিপিকে শাপলা প্রতীক দেবে না। এ অবস্থায় নির্বাচনের আগেই কমিশনের স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পঞ্চগড় জেলা শহরের মকবুলার রহমান সরকারি কলেজে অনুষ্ঠিত এক বিতর্ক উৎসবে এসব কথা বলেন সারজিস আলম। পঞ্চগড় ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন ও খালিদ স্পিকস আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে জেলার ৬৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে। তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশন বলেছে, তারা শাপলা প্রতীক দেবে না। এটা পরিষ্কার, তারা কোনো চাপে এই প্রতীক থেকে পিছিয়ে এসেছে। যদি একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচন কমিশন প্রতীক দেওয়ার মতো বিষয়েও চাপের কাছে পরাজিত হয়, তাহলে নির্বাচন শুরুর আগেই এর নিরপেক্ষতা নিয়ে জনমনে সন্দেহ তৈরি হবে।”
তিনি আরও জানান, এনসিপি শাপলা প্রতীক অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আবেদন করেছে এবং যেহেতু এতে আইনগত কোনো বাধা নেই, তাই তারা আশা করেন নির্বাচন কমিশন প্রতীকটি বরাদ্দ দেবে।
এ সময় তিনি আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধেও তীব্র সমালোচনা করেন। সারজিস আলম বলেন, “বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের অধ্যায় শেষ। তারা এখন পাচার করা অর্থ পাঠিয়ে মাঝেমধ্যে কিছু লোক দিয়ে মিছিল করাচ্ছে, যেগুলো প্রকৃত আওয়ামী লীগের মিছিল নয়। অনেক সময় বলা হয় আওয়ামী লীগ ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ জনসমর্থন নিয়ে আছে, কিন্তু বাস্তবে কখনোই এত জনসমর্থন ছিল না। তারা যেসব লোক মিছিলে দেখাতো, সেগুলো ছিল ভাড়া করা। যদি তারা সত্যিকার অর্থে আওয়ামী লীগের লোক হতো, তাহলে জুলাইয়ের অভ্যুত্থানে তারা মাঠে থাকতো।”
গণ অধিকার পরিষদ ও এনসিপির একীভূত হওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা যেহেতু সমমনা, কাছাকাছি আদর্শের এবং তরুণ প্রজন্মের রাজনৈতিক দল—তাই আমরা আলোচনা করছি কিভাবে নির্বাচনে একসাথে লড়াই করা যায়। বাংলাদেশের মানুষ তরুণদের একসাথে দেখতে চায়। রাজনৈতিক দল হিসেবে যদি আমরা ঐক্যবদ্ধ হতে পারি, তাহলে মাঠপর্যায়ের মানুষও ঐক্যবদ্ধ হবে। এই আলোচনা ইতিবাচকভাবে এগোচ্ছে এবং আমরা আশাবাদী, নির্বাচনে এক হয়ে অংশ নিয়ে মানুষের সমর্থন নিয়ে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করতে পারব।”