| বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশে বিভিন্নভাবে চক্রান্ত চলছে: ফখরুল মারা গেলেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান ১০ বছরের মধ্যে ক্ষমতায় না গেলে রাজনীতি ছেড়ে দেয়ার বার্তা নাহিদের সংসদ নির্বাচনের আগে গণভোট হতে দেওয়া হবে না: হুসিয়ারী ফখরুলের জাতিসংঘে দেওয়া আ.লীগের চিঠিতে কোনো কাজ হবে না: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ডেঙ্গুতে লাশের মিছিলে আরও ৫ জন, ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি ১০৩৪ আওয়ামী লীগ আমলে সাংবাদিকতা তলানিতে ছিল : প্রেস সচিব চট্টগ্রামে বিএনপির গণসংযোগে গুলির ঘটনায় বিক্ষোভ আগামী পাঁচ বছরে ১ লাখ দক্ষকর্মী নিবে জাপান ২০২৬ সালের সরকারি ছুটির তালিকা প্রকাশ পিআর নিয়ে দেশে ষড়যন্ত্র চলছে: খন্দকার মোশাররফ তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে মৃত ব্যক্তিকে ভোটের সুযোগ দেওয়া হয়েছে: অ্যাটর্নি জেনারেল ১১ তারিখের পর ৫ দফা না মানলে ঢাকার চিত্র পাল্টে দেয়ার হুশিয়ারী জামায়াতের পাখির খাদ্যের আড়ালে সাড়ে ৬ কোটি টাকার নিষিদ্ধ পপি বীজ জব্দ এক্সিম ব্যাংকের সাবেক এমডি সিরাজ গ্রেপ্তার মঞ্চ ৭১ মামলায় জামিন পেলেন লতিফ সিদ্দিকী রাউজানে সন্ত্রাসী হামলায় বিএনপির ৫ নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ আ.লীগ ঝটিকা মিছিলের চেষ্টা করলে আইনের কঠোর প্রয়োগ করা হবে: প্রেস সচিব চট্টগ্রামে বিএনপির জনসংযোগে গুলিতে সরোয়ার নিহত নির্বাচনী গণসংযোগকালে বিএনপি প্রার্থী এরশাদ উল্লাহসহ ৩জন গুলিবিদ্ধ

সেফটি অডিট ছাড়াই চলছে মেট্রো-এখনো অনেক বড় ত্রুটি আছে : ডিএমটিসিএল এমডি

ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফারুক আহমেদ বলেছেন, যেহেতু মেট্রোরেলের আগে সেফটি অডিট হয়নি। তাই সেফটি অডিট করতে চাইছি। যত দ্রুত করা যায়, সেটা আমরা করব। থার্ড পার্টিকে (তৃতীয় পক্ষ) দিয়ে এই অডিট করানো হবে। ইউরোপীয় কোনো প্রতিষ্ঠান দিয়েই করানো হবে। আমাদের কাছে ফ্রান্সের দুটি প্রতিষ্ঠান আবেদন করেছে। সেফটি অডিট করার জন্য আমরা খুব শিগগির টেন্ডারের প্রক্রিয়ায় যাব। তার এ বক্তব্যে বেরিয়ে এলো থলের বিড়াল। কতটা যাত্রেদের নিরাপত্তার বিষয়ে অমনোযোগী ছিল ডিএমটিসিএল তা এখন সংস্থাটির এমডির কথায় বেরিয়ে এলো। এমডি আরো বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে ঢাকায় ছয়টি মেট্রোরেল লাইন নির্মাণের যে লক্ষ্যমাত্রা আগে নেওয়া হয়েছিল, তা কিসের ভিত্তিতে হয়েছে, তা তার বোধগম্য নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।

  • প্রকাশের সময় : Nov 3, 2025 ইং
সেফটি অডিট ছাড়াই চলছে মেট্রো-এখনো অনেক বড় ত্রুটি আছে : ডিএমটিসিএল এমডি ছবির ক্যাপশন:
ad728

বিশেষ প্রতিনিধি : মেট্রোর  দূর্ঘটনার বিষয়ে ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফারুক আহমেদ বলেছেন,  চালুর আগে নিরাপত্তার পূর্ণাঙ্গ নিরীক্ষা (সেফটি অডিট) ছাড়াই যাত্রা শুরু হয়েছিল ঢাকা মেট্রোরেলের। এর মধ্যে বিয়ারিং প্যাড নিচে পড়ে একজন পথচারী মারা যান। এ বিষয়ে সোমবার (৩ নভেম্বর) সাংবাদিকদের  তিনি বলেন, যেহেতু মেট্রোরেলের আগে সেফটি অডিট হয়নি। তাই সেফটি অডিট করতে চাইছি। যত দ্রুত করা যায়, সেটা আমরা করব। থার্ড পার্টিকে (তৃতীয় পক্ষ) দিয়ে এই অডিট করানো হবে। ইউরোপীয় কোনো প্রতিষ্ঠান দিয়েই করানো হবে। আমাদের কাছে ফ্রান্সের দুটি প্রতিষ্ঠান আবেদন করেছে। সেফটি অডিট করার জন্য আমরা খুব শিগগির টেন্ডারের প্রক্রিয়ায় যাব। তার এ বক্তব্যে বেরিয়ে এলো থলের বিড়াল। কতটা যাত্রেদের নিরাপত্তার বিষয়ে অমনোযোগী ছিল ডিএমটিসিএল তা এখন সংস্থাটির এমডির কথায় বেরিয়ে এলো। 
এমডি আরো বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে ঢাকায় ছয়টি মেট্রোরেল লাইন নির্মাণের যে লক্ষ্যমাত্রা আগে নেওয়া হয়েছিল, তা কিসের ভিত্তিতে হয়েছে, তা তার বোধগম্য নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।

প্রসঙ্গত : এক বছর আগে ঢাকার মেট্রোরেলের স্তম্ভের একটি বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ার পর গত ২৬ অক্টোবর ফার্মগেটে আরেকটি বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে এক পথচারীর মৃত্যু হয়। এরপর ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় শাহবাগ থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ ছিল।
বিয়ারিং প্যাড পড়ে পথচারীর মৃত্যুর এক সপ্তাহ পর আজ সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে উত্তরার দিয়াবাড়িতে মেট্রোরেলের প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান এমডি ফারুক আহমেদ। তিনি বলেন, এখনো অনেক বড় ত্রুটি রয়ে গেছে। যত সমস্যা আছে, এগুলো ঠিকাদারকে মেরামত করতে হবে। এ জন্য ‘ডিফেক্ট লায়াবেলিটি’ দুই বছর বাড়ানোর জন্য ঠিকাদারকে বলা হয়েছে।

বিয়ারিং প্যাড পড়ে যাওয়ার পর এর নিরাপত্তা সম্পর্কে জানতে চাইলে ডিএমটিসিএলের এমডি বলেন, বিয়ারিং প্যাড হঠাৎ করে পড়ে যায়নি। এটা হঠাৎ করে পড়ে যাওয়ার জিনিস নয়। যেহেতু এটা নিয়ে তদন্ত চলছে, ফলে এ বিষয়ে আমি জাজমেন্টাল হতে চাই না। তবে যেটা হতে পারে, সেটা বলতে পারি, ডিজাইন ফল্ট হতে পারে। যে জিনিসের ওপর বসানোর কথা বলা হয়েছিল, যা যা দেওয়ার কথা ছিল, সেটা বসানো হয়নি। যে ডিজাইনে হওয়ার কথা ছিল, সেটা হয়তো ঠিকাদার করেনি। যে পরামর্শককে বুঝে নেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, তারা হয়তো ঠিক করে জিনিসটা বুঝে নেয়নি। এই চারটা কারণে হতে পারে অথবা এর মধ্যে কোনো একটা কারণেও হতে পারে।

ফারুক আহমেদ আরও বলেন, দোষ কিন্তু বিয়ারিংয়ের নয়। বিয়ারিং যে লাগিয়েছে, সেটি বাজেভাবে লাগানো হয়েছে কি না? যার আসলে বুঝে নেওয়ার দায়িত্ব ছিল, সে বুঝে নিয়েছে কি না, সেগুলো এখন দেখতে হবে।

এসব কাজ বুঝে নেওয়ার জন্য হাজার কোটি টাকায় বিদেশি পরামর্শক নিয়োগ করা আছে জানিয়ে ফারুক আহমেদ বলেন, প্রথম ঠিকাদারের কাছ থেকে বুঝে নেবেন পরামর্শক। আমাদের বুঝিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব পরামর্শকদের। তখন এই কাজগুলো কিছুটা তাড়াহুড়া হয়েছে। কেন হয়েছে, সেটার উত্তর তো আমি দিতে পারব না। যেখানে দুর্ঘটনা ঘটেছিল, সেই অংশে অনেক ডিফেক্ট আছে। ফলে সেটা এখনো আমরা বুঝে নিইনি।

ডিএমটিসিএলের এমডি বলেন, যেখানে বিয়ারিং প্যাড পড়ে গিয়েছিল, ওই অংশের ত্রুটি সারিয়ে দেওয়ার সময়সীমা (ডিফেক্ট লায়াবেলিটি) গত জুন পর্যন্ত ছিল। কিন্তু ডিএমটিসিএল তাদের এই সময়সীমা গ্রহণ করেনি। 

দুর্ঘটনার পর মেট্রোরেলের সব কটি পিলার পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে জানিয়ে ফারুক আহমেদ বলেন, এর আগে পুরো পথের বিয়ারিং প্যাডের ছবি ড্রোন ক্যামেরা দিয়ে তোলা হয়েছে। এরপর কর্মকর্তারা সরেজমিনে নিরীক্ষা করেছেন। যেসব স্থানে ত্রুটি শনাক্ত করা হয়েছে, সেগুলোর বিষয়ে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে জানানো হয়েছে। ডিএমটিসিএলের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হলো, যেখানে ত্রুটি বা সমস্যা পাওয়া যাবে, সেখানে বিয়ারিং প্যাড অবশ্যই পরিবর্তন করা হবে।

চার বছর আগে তাড়াহুড়া করে ঢাকার মেট্রোরেল চালু করা হয়েছিল দাবি করে ফারুক আহমেদ বলেন, প্রকল্পটি চালুর আগে ন্যূনতম ছয় থেকে নয় মাসের পরীক্ষামূলক চলাচল নিশ্চিত করার প্রয়োজন ছিল। তিন বছরে মেট্রোরেল চালু হবে বা পাঁচ বছরে মেট্রোরেল সম্পূর্ণ হবে—এ ধরনের ধারণা আসলে ভুল। কোনো মেট্রোরেল নির্মাণের জন্য সব ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়ার পর ছয় থেকে সাত বছর লাগে। এর আগে প্রকল্প প্রণয়ন, সম্ভাব্যতা যাচাই ও অন্যান্য প্রস্তুতিতে চলে যায় তিন বছর।

২০৩০ সালের মধ্যে ঢাকায় ছয়টি মেট্রোরেল লাইন নির্মাণের যে লক্ষ্যমাত্রা আগে নেওয়া হয়েছিল, তা কিসের ভিত্তিতে হয়েছে, তা তার বোধগম্য নয় বলে মন্তব্য করেন ডিএমটিসিএলের এমডি।

নতুন মেট্রোরেল লাইন নির্মাণ প্রকল্প তাহলে মুখ থুবড়ে পড়ছে কি না, এমন প্রশ্ন করা হলে ফারুক আহমেদ বলেন, মেট্রোরেল প্রকল্প মুখ থুবড়ে পড়েনি। মেট্রোরেল আমাদের লাগবে। আমাদের লক্ষ্য হলো, দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন এই প্রকল্পের ঋণ পরিশোধ করতে সক্ষম হয়। সরকারের উদ্দেশ্য হলো একটি প্রতিযোগিতামূলক বাজার তৈরি করা, যাতে একাধিক প্রতিষ্ঠান অংশ নিতে পারে এবং কম খরচে উন্নত মানের মেট্রোরেল নির্মাণ সম্ভব হয়। মেট্রোরেল আমাদের করতেই হবে; তবে তা হবে স্মার্ট ফাইন্যান্সিংয়ের মাধ্যমে বলে জানান এমডি। 

নিউজটি আপডেট করেছেন : N Ray Raja

কমেন্ট বক্স